বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে আওয়ামী লীগের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিশেষ করে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান। তিনি নতুন সংশোধিত অ্যান্টি-টেররিজম অ্যাক্টের বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং মন্তব্য করেছেন যে, এই আইনটি দেশের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং আওয়ামী লীগ সমর্থকদের রাজনৈতিক অধিকারকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
বার্গম্যান তার পোস্টে বলেন, সংশোধিত আইন অনুসারে, আওয়ামী লীগ বা তার সমর্থনে প্রেস বিবৃতি প্রকাশ, গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যম, মিছিল, সভা, সংবাদ সম্মেলন বা জনসমক্ষে বক্তৃতা দেওয়ার মতো সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি এই পদক্ষেপকে একেবারে “চমকে দেওয়ার মতো” এবং “দমনমূলক” আইন হিসেবে বর্ণনা করেন।
এছাড়া, বার্গম্যান আরও বলেন, “কোনো ভাবনায়ও ছিল না যে হাসিনা সরকারের পতনের নয় মাস পর, একটি সংস্কারবাদী দাবি করা সরকার এমন কঠোর আইন প্রণয়ন করবে।” তার মতে, এই নিষেধাজ্ঞা শুধু আওয়ামী লীগ সমর্থকদের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করবে না, বরং দেশের সামগ্রিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার ১০ মে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যেখানে আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম ও অনলাইন উপস্থিতি নিষিদ্ধ করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, এটি জাতীয় নিরাপত্তা, জুলাই আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের নিরাপত্তা এবং ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য নেওয়া হয়েছে।
বার্গম্যানের এই সমালোচনা দেশে রাজনৈতিক ও গণমাধ্যম মহলে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। অনেকেই তার মতের সঙ্গে একমত হয়ে এই পদক্ষেপটিকে গণতান্ত্রিক অধিকার পরিপন্থী এবং স্বাধীন মতপ্রকাশের ওপর আঘাত হিসেবে দেখছেন, আবার কিছু মানুষ মনে করছেন, আওয়ামী লীগের অতীত কর্মকাণ্ডের প্রেক্ষিতে এই নিষেধাজ্ঞা বিচার প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয়।
এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ভবিষ্যতের উপর নতুন প্রশ্ন তৈরি করেছে।